জোহরান ও মাস্কের নাগরিকত্ব নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের ইঙ্গিত: কতটুকু আইনি ভিত্তি আছে?
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের ডেমোক্র্যাট মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানির নাগরিকত্ব বাতিলের বিষয়টি বিবেচনার ইঙ্গিত দিয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন কর্মকর্তা। এদিকে, একসময়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইলন মাস্ক সম্পর্কেও ট্রাম্প মন্তব্য করেছেন, "তাঁকে ব্যবসা গুটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে যেতে হতে পারে।"
সরকারি ব্যয় ও করছাড়–সংক্রান্ত একটি বিলকে কেন্দ্র করে ট্রাম্প ও মাস্কের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। ট্রাম্প এই বিলকে ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ বলে উল্লেখ করলেও মাস্ক এর সমালোচনা করেছেন, যার জেরে উভয়ের মধ্যে প্রকাশ্য বিরোধ তৈরি হয়েছে।
জোহরান মামদানি ও ইলন মাস্ক—উভয়ের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে। তাঁরা পরবর্তীতে নিয়ম অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নিয়ে নাগরিকত্ব লাভ করেন।
জোহরান মামদানির জন্ম উগান্ডার কাম্পালায়, ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক পরিবারে। তিনি সাত বছর বয়সে নিউইয়র্কে যান এবং ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন।
ইলন মাস্কের জন্ম দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়ায়। তাঁর মা কানাডার নাগরিক এবং বাবা দক্ষিণ আফ্রিকান। মাস্ক ১৭ বছর বয়সে কানাডায় যান এবং ১৯৯২ সালে পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। ২০০২ সালে তিনি মার্কিন নাগরিক হন।
মাস্কের অভিবাসন-সংক্রান্ত একটি বিতর্ক ২০২৪ সালের অক্টোবরে আলোচনায় আসে, যখন ওয়াশিংটন পোস্ট এক প্রতিবেদনে দাবি করে, মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রে কর্মজীবন শুরুর সময় যথাযথ ওয়ার্ক পারমিট (কর্ম অনুমোদন) পাননি। তবে মাস্ক এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী, ন্যাচারালাইজেশন প্রক্রিয়ায় কোন ব্যক্তি যদি মিথ্যা তথ্য দিয়ে নাগরিকত্ব লাভ করে থাকেন বা কোনো গুরুতর অপরাধে দোষী প্রমাণিত হন, তাহলে তাঁর নাগরিকত্ব বাতিল করা হতে পারে। তবে রাজনৈতিক মতবিরোধ বা ভিন্নমতের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া সাংবিধানিকভাবে সম্ভব নয় এবং তা আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলেই বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
তবে বিষয়টি ঘিরে ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক ইঙ্গিত ও ভাষ্য নাগরিকত্ব সংক্রান্ত বিতর্ককে নতুন মাত্রা দিয়েছে।