লাল চাঁদ হত্যা: মূল হোতাদের ধরতে চিরুনি অভিযান, ৭ জন আটক

 

নির্বাচনপূর্ব সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আজ রোববার (১৩ জুলাই) থেকে দেশব্যাপী বিশেষ চিরুনি অভিযান শুরু হয়েছে। এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

সকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা–বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই তথ্য দেন।

রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায় সংঘটিত সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, “এ ধরনের নির্মম ও নৃশংস ঘটনা কোনোভাবেই সভ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়।” তিনি জানান, ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলার ১৯ জন আসামির মধ্যে এখন পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং মামলার তদন্তে কোনো অবহেলা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, “অপরাধী যে–ই হোক না কেন, তার রাজনৈতিক পরিচয়ের ভিত্তিতে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আইন সবার জন্য সমান।” মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেওয়ার প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান। খুলনায় সম্প্রতি সংঘটিত আরেকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়ও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “মিটফোর্ডের ঘটনায় কেউই পুলিশের জরুরি সেবার ‘৯৯৯’ নম্বরে কল করেনি। এমনকি পাশে উপস্থিত আনসার সদস্যদের কাছেও কেউ কোনো তথ্য দেননি।”

তিনি জানান, সাম্প্রতিক সময়ে খুন, চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, নারী নির্যাতন, সন্ত্রাস, মাদক চোরাচালানসহ বিভিন্ন অপরাধ বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি এবার বিশেষ চিরুনি অভিযান চালানো হবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। এ লক্ষ্যে নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ চিরুনি অভিযান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

উল্লেখ্য, গত বুধবার রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) নির্মমভাবে নিহত হন। তাঁকে পরিকল্পিতভাবে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে ও ইট-পাথর দিয়ে আঘাত করে শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে তাঁকে বিবস্ত্র করে তাঁর শরীরের ওপর লাফিয়ে বর্বরতা চালানো হয়।

ঘটনায় জাতীয়তাবাদী যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কয়েকজন নেতাকর্মীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় যুবদল দুই আসামিকে বহিষ্কার করেছে, একইভাবে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলও আরও দুই আসামিকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দিয়েছে।

Next Post Previous Post