মাত্রাতিরিক্ত ঘাম—স্বাভাবিক না অসুস্থতার লক্ষণ?
একই পরিবেশে থাকলেও সবার শরীরে ঘাম সমান হয় না। এটি নির্ভর করে ব্যক্তির শরীরের ঘামগ্রন্থির কার্যকারিতার ওপর। যাঁদের ঘামগ্রন্থি বেশি সক্রিয়, তাঁদের তুলনামূলক বেশি ঘাম হয়। তবে স্বাভাবিকের চেয়ে যদি অতিরিক্ত ঘাম হতে থাকে এবং তা অস্বস্তিকর মনে হয়, তবে তা হতে পারে অন্য কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যার ইঙ্গিত।
হাইপারহাইড্রোসিস
এটি একটি অবস্থা, যেখানে ঘামগ্রন্থি অতিরিক্তভাবে সক্রিয় থাকে। যদিও এটি গুরুতর রোগ নয়, কিন্তু হাত-পা বা শরীরের অন্য অংশে অতিরিক্ত ঘামের কারণে দৈনন্দিন কাজে বিঘ্ন ঘটতে পারে। প্রয়োজনে চিকিৎসক কিছু লোশন বা ওষুধের পরামর্শ দিতে পারেন।
থাইরোটক্সিকসিস
থাইরয়েড হরমোনের অতিরিক্ত নিঃসরণে শরীরে অতিরিক্ত ঘাম, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, ওজন কমে যাওয়া, গলা ফুলে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত হরমোন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
পোস্টমেনোপজাল সিনড্রোম
নারীদের মাসিক বন্ধ হওয়ার পর হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে অতিরিক্ত ঘাম, গরম ভাপ লাগা, অস্থিরতা ও বিষণ্নতা দেখা দিতে পারে। সঠিক চিকিৎসায় এ উপসর্গগুলো অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
হাইপোগ্লাইসেমিয়া
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত কেউ হঠাৎ অতিরিক্ত ঘামতে থাকলে, মাথা ঘোরালে বা দৃষ্টি ঝাপসা হলে সঙ্গে সঙ্গে রক্তে শর্করার মাত্রা মাপা উচিত। রক্তে শর্করা খুব কমে গেলে (৩.৯ মিমোল/লিটারের নিচে) এটি হাইপোগ্লাইসেমিয়া। এ ক্ষেত্রে চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়ানো জরুরি।
হার্ট অ্যাটাক
ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে বুকে ব্যথা ছাড়াও অতিরিক্ত ঘাম, বমিভাব ও শারীরিক অস্বস্তি হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ হতে পারে। এমন উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন।
ফিওক্রোমোসাইটোমা
এটি একটি বিরল টিউমার, যা অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিতে হয়ে থাকে। এর ফলে হরমোন নিঃসরণ বেড়ে গিয়ে হঠাৎ ঘাম, মাথাব্যথা, বুক ধড়ফড়, উচ্চ রক্তচাপ, বমিভাব ও পেটব্যথা হতে পারে। যদিও উপসর্গগুলো কিছু সময় পর মিলিয়ে যায়, তবু এগুলো অবহেলা না করাই ভালো।
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
স্টেরয়েড, কিছু ব্যথানাশক, মাইগ্রেন ও ডিপ্রেশনের ওষুধ থেকেও অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে।