হিজবুল্লাহর কণ্ঠে ইরানের প্রতি সমর্থন, নীরবতা ভাঙলো লেবানন

 



লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ সাম্প্রতিক ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। ইরানের ওপর ইসরায়েলের হামলা এবং তেহরানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের হুমকির তীব্র নিন্দা জানিয়ে গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, তারা এই সংঘাতে নিরপেক্ষ নয়। এই বিবৃতি মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) প্রকাশিত আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুসারে, হিজবুল্লাহর মহাসচিব নাইম কাসেম এক বিবৃতিতে বলেছেন যে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যার হুমকি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ গোটা অঞ্চলের জনগণের বিরুদ্ধেই এক আগ্রাসন। এর মাধ্যমে তিনি ইরানের প্রতি তাদের অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

ইসরায়েলের সঙ্গে পূর্ববর্তী সংঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হওয়া সত্ত্বেও, হিজবুল্লাহ এই সংঘাতে নিজেদের ভূমিকা নিয়ে সক্রিয় আলোচনায় এসেছে। যদিও ইয়েমেনের হুতিরা প্রায়শই ইসরায়েলে হামলা চালায়, হিজবুল্লাহ এতদিন পর্যন্ত সরাসরি কোনো পদক্ষেপে অংশ নেয়নি। তবে নাইম কাসেমের এই মন্তব্য ইঙ্গিত দেয় যে পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নিতে পারে। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, "হিজবুল্লাহ ও ইসলামী প্রতিরোধ কোনোভাবেই নিরপেক্ষ নয়। ইরানের স্বাধীন অধিকার রক্ষায় আমরা আমেরিকা ও তার ক্যান্সার ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছি।"

বিবৃতিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, উপযুক্ত মনে করলে হিজবুল্লাহ এই সংঘাতে অংশ নেবে। এটি ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে হিজবুল্লাহর সম্ভাব্য সম্পৃক্ততার একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র হিজবুল্লাহকে এই সংঘাতে না জড়ানোর জন্য সতর্ক করেছে। সিরিয়ার জন্য মার্কিন বিশেষ দূত টম ব্যারাক মন্তব্য করেছেন, "আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্ষ থেকে বলতে পারি— এটি হবে খুবই, খুবই, খুবই খারাপ সিদ্ধান্ত।"

উল্লেখ্য, গত বছর ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতে হিজবুল্লাহর উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছিল। নভেম্বরে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে ওই সংঘাতের অবসান ঘটেছিল। ইসরায়েলি হামলায় গোষ্ঠীটির বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা নিহত হওয়ায় হিজবুল্লাহ সামরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিল। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের এই সাহসী বিবৃতি অঞ্চলটিতে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।

Next Post Previous Post