পদ্মা নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সুজানগরে ভয়াবহ ভাঙন, হুমকিতে নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাট

     পদ্মায় পানি বাড়ায় সুজানগরে তীব্র ভাঙন

পদ্মা নদীতে পানির স্তর বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাবনার সুজানগর উপজেলার নাজিরগঞ্জ এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র নদীভাঙন। এতে করে বিস্তীর্ণ এলাকার জমি ও বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাট। ভাঙন অব্যাহত থাকলে যে কোনো সময় ঘাটটি নদীতে সম্পূর্ণভাবে বিলীন হয়ে যেতে পারে।

নাজিরগঞ্জ-জৌকুড়া ফেরি রুটটি উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি জেলার মধ্যে যোগাযোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি পথ হিসেবে পরিচিত। স্বল্প সময় ও খরচে পারাপারের জন্য এটি বহু মানুষের দৈনন্দিন যাতায়াতের নির্ভরযোগ্য মাধ্যম।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পদ্মা নদীর পূর্বপাশ ঘেঁষে ফেরিঘাটের মূল পন্টুনের কাছ থেকেই শুরু হয়েছে ভাঙন। কয়েক হাত দূরের জমিও এখন নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার অপেক্ষায়। আশপাশে বসবাসকারী মানুষজন জানিয়েছেন, তাদের বসতবাড়ি নদীর একেবারে ধারে। এখন তারা দিনরাত চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছেন, কখন ঘরবাড়ি নদীতে চলে যায় তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

নদীপাড়ের বাসিন্দাদের অভিযোগ, নদীর পশ্চিম পাড়ে বড় ব্লক দিয়ে রক্ষা ব্যবস্থার উদ্যোগ নেওয়া হলেও পূর্বপাড় সম্পূর্ণ অবহেলিত। কয়েক বছর ধরেই ভাঙন চললেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এবারের ভাঙন অতীতের তুলনায় অনেক বেশি ভয়াবহ।

নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাটের পোর্ট অফিসার তোফাজ্জল হোসেন জানান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)-এর পক্ষ থেকে ঘাট উন্নয়নের পরিকল্পনা থাকলেও ২০২৩ সালে জমি হস্তান্তর না হওয়ায় তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, “ইউএনও ও ডিসি আমাদের জমি বুঝিয়ে দেননি বলে কোনো উন্নয়ন করা যাচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে ঘাট পুরোপুরি ভেঙে যাবে, আর আমাদের কোটি টাকার পন্টুন সরিয়ে নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।”

সুজানগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানান, স্থানীয়দের কিছু আপত্তির কারণে জমি বুঝিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে নদীভাঙন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড এই বিষয়ে কাজ শুরু করেছে।

Next Post Previous Post