ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে গোষ্ঠীগত বিরোধে সংঘর্ষ, ছাত্রদল নেতা নিহত

 


ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে সোহরাব মিয়া (২৮) নামে এক ছাত্রদল নেতা নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। শনিবার (৫ জুলাই) বেলা ২টার দিকে ইউনিয়নের চাতলপাড় বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত সোহরাব মিয়া চাতলপাড় ইউনিয়নের কাঠালকান্দি গ্রামের বাসিন্দা এবং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সহসাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

স্থানীয় সূত্র, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়নের উল্টা ও মোল্লা গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পূর্বেও একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি দলীয় কমিটি ও স্থানীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিয়ে বিরোধ আরও তীব্র হয়।

শনিবার দুপুরে দুই পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চাতলপাড় বাজার এলাকায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে সোহরাব মিয়া নিহত হন এবং উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। এ সময় উল্টা গোষ্ঠীর পাঁচটি দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। বিকেলে সোহরাবের মৃত্যুর খবরে উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে লালারপুট গ্রামের একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আহতদের মধ্যে নেয়ামুল মিয়া (৪০), বাবুল মিয়া (৪৩) ও সুরাফ মিয়াকে (৫০) কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্য আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

চাতলপাড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম জানান, উভয় গোষ্ঠীর লোকজন বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। সংঘর্ষের পর চাতলপাড় বাজারের প্রায় পাঁচ শতাধিক দোকান বন্ধ হয়ে যায়।

মোল্লা গোষ্ঠীর পক্ষে মোতাহার হোসেন বলেন, তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়, যাতে সোহরাব মিয়া টেঁটাবিদ্ধ হয়ে মারা যান। উল্টা গোষ্ঠীর নেতৃস্থানীয় গিয়াস উদ্দিনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি, কারণ তাঁর ফোন বন্ধ ছিল।

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজহারুল ইসলাম জানান, পূর্ব বিরোধের জেরে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।

জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সমীর চক্রবর্তী বলেন, দুটি গোষ্ঠীতেই বিএনপি ও যুবদলের কর্মী-সমর্থক রয়েছে। তবে এটি কোনো দলীয় সংঘর্ষ নয়; বরং গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বে ছাত্রদলের নেতা নিহত হয়েছেন।

Next Post Previous Post