দাফনের পর জানা গেল, জীবিত আছেন আবদুর রহিম!

 

truetimes24


চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানার আওতাধীন দেওয়ান বাজার রুমঘাটা এলাকার একটি খাল থেকে এক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়, যাকে নিজের নিখোঁজ ছেলে ভেবে দাফন করেছিলেন ভোলার এক ব্যক্তি। তবে কিছুদিন পর সেই নিখোঁজ ছেলের মোবাইল ফোন হঠাৎ চালু হলে বেরিয়ে আসে এক বিস্ময়কর তথ্য।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অনুসন্ধানে নিশ্চিত হয় যে যাকে আবদুর রহিম ভেবে কবর দেওয়া হয়েছিল, তিনি এখনো জীবিত এবং ইচ্ছাকৃতভাবে আত্মগোপনে ছিলেন।

উদ্ধার হওয়া মরদেহের প্রকৃত পরিচয় এখনো জানা যায়নি। তবে পিবিআই-এর চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মরদেহের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। সম্ভাব্য স্বজনদের ডিএনএর সঙ্গে মেলালেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

গত ৩ মে শনিবার রুমঘাটা এলাকায় একটি খাল থেকে এক অজ্ঞাত পরিচয়ধারী ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন ৪ মে, ভোলা থেকে আসা উবাইদুল্লাহ নামের এক ব্যক্তি মরদেহটিকে তাঁর নিখোঁজ ছেলে আবদুর রহিমের দেহ বলে দাবি করেন। এরপর মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে ভোলায় নিয়ে গিয়ে দাফন করা হয়।

তবে কয়েকদিন পর রহিমের বন্ধ থাকা মোবাইল হঠাৎ চালু হলে পিবিআই বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আবদুর রহিমকে জীবিত অবস্থায় খুঁজে বের করে তাদের হেফাজতে নেওয়া হয়। এ সময় তাঁর বাবা উবাইদুল্লাহকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

পিবিআই সূত্র জানায়, আবদুর রহিম একটি প্রতারণার ফাঁদে পড়েছিলেন। মোবাইল গেম খেলে চার লাখ টাকা ও একটি আইফোন জেতার প্রলোভনে পড়ে তিনি প্রতারকদের হাতে ৪০ হাজার টাকা তুলে দেন। এরপর তিনি ঋণের বোঝায় পড়ে মোবাইল বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যান।

এদিকে তাঁর নিখোঁজ অবস্থায় খাল থেকে এক মরদেহ উদ্ধারের খবর শুনে পরিবারটি সেটিকে আবদুর রহিমের দেহ ভেবে শনাক্ত করে।

রহিমের বাবা উবাইদুল্লাহ পিবিআইকে বলেন, “মরদেহটি দেখতে আমার ছেলের মতোই মনে হয়েছিল। নিখোঁজ থাকায় এমনটা ভাবা স্বাভাবিক ছিল। আমাদের কোনো অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না।”

এ বিষয়ে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা জানান, “রহিমের মোবাইল চালু হওয়ার পর আমরা যাচাই-বাছাই শুরু করি। পরে তাকে জীবিত উদ্ধার করি। এখন পর্যন্ত মরদেহের ডিএনএ যাদের সঙ্গে মেলানো হয়েছে, কারো সঙ্গে তা মিলেনি। মরদেহের ডিএনএ নমুনা সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। কেউ স্বজন দাবি করলে সেখান থেকে পরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”



Next Post Previous Post