এনসিপির আহ্বান: 'জুলাই সনদ' সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে ৩ আগস্ট কঠোর আন্দোলন

 


দিনাজপুর, বাংলাদেশ – জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম আজ দিনাজপুরে 'জুলাই পদযাত্রা' কর্মসূচির চতুর্থ দিনে এক জনসভায় 'জুলাই সনদ' সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের মর্যাদা, স্বীকৃতি এবং রাজনৈতিক নিরাপত্তা অবশ্যই জুলাই ঘোষণাপত্র ও নতুন সংবিধানে নিশ্চিত করতে হবে।

দিনাজপুর ইন্সিটিটিউট মাঠে শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেলে দেওয়া বক্তব্যে নাহিদ ইসলাম আগামী ৩ আগস্ট ঢাকায় 'জুলাই ঘোষণাপত্রের' দাবিতে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

নাহিদ ইসলাম উল্লেখ করেন যে, জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে গেলেও প্রত্যাশিত দেশ পরিবর্তন হয়নি। তিনি বলেন, "২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হলেও, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব হয়নি। আমরা দেখছি, সেই স্বৈরাচারী সরকারের রেখে যাওয়া কাঠামো এখনো বিদ্যমান, এবং পূর্বের লুটেরা ও দুর্নীতিবাজদের রক্ষা করা হচ্ছে।"

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ, ছাত্র-জনতা একটি নতুন কাঠামো, নতুন রাষ্ট্র এবং নতুন দেশের জন্য রাজপথে নেমেছিল, কেবল একটি দলকে সরিয়ে অন্য একটি দলকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয়। তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, "গণঅভ্যুত্থানের অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করতে আমরা মাঠে নেমেছি। সেই ফ্যাসিবাদী কাঠামো বিলুপ্ত করে একটি নতুন রাষ্ট্র, গণতন্ত্র এবং বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে আমাদের এই যাত্রা।"

দিনাজপুরবাসীকে উদ্দেশ্য করে এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, "আমরা জানি, দিনাজপুরের মাটি ইতিহাসের সাক্ষী। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে নীল বিদ্রোহ থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত, অন্যায়ের বিরুদ্ধে দিনাজপুরের মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। এই জেলার কৃষকেরা নীল বিদ্রোহে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল, এবং ১৯৭১ সালে এই জেলার মানুষ পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিল।"

আঞ্চলিক বৈষম্যের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, "ধান-চালের জেলা দিনাজপুরের কৃষকেরা ধানের ন্যায্যমূল্য পান না। খাদ্যভাণ্ডার দিনাজপুরের উৎপাদিত চাল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। দিনাজপুর উৎপাদন করবে আর ঢাকা ভোগ করবে—এমন দেশ আমরা চাই না। আমরা আঞ্চলিক বৈষম্য চিরতরে বিদায় করতে চাই।"

এনসিপি আহ্বায়ক দলের নেতাদের নিয়ে দিনাজপুর বড় মাঠ থেকে প্রায় এক কিলোমিটার হেঁটে দিনাজপুর ইন্সিটিটিউট মাঠে এসে সংক্ষিপ্ত পথসভায় বক্তব্য দেন। এ সময় উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, ডা. আব্দুল আহদ, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, ডা. তাসনিম জারা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Next Post Previous Post